পার্বত্য অঞ্ছল আমাদের দেশের প্রাকৃতিক ঘাটি।
এটা হাত ছাড়া হঊয়া মানে দেশের নিরাপত্তা অর্ধেকে নেমে আসা।
আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় সূত্রে জানা
গেছে, আইএলও কনভেনশন-১৬৯ অনুমোদন করা হলে তা একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রীয়
অখণ্ডতার জন্য বড় রকমের হুমকি হয়েও দেখা দিতে পারে। মানবাধিকার ও
আদিবাসীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে মর্মে আদিবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে
জাতিসংঘ সরকারের সঙ্গে কথা না বলেই শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে পারবে।
যেমনটি হয়েছে দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে।
কনভেনশন অনুযায়ী
আদিবাসীরা আপত্তি করলে সেনাবাহিনী সেখানে থাকতে পারবে না। উপজাতি
জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার পিছনে এটাই বড় ভীতি হয়ে
কাজ করছে। সূত্র জানায়, কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসীরা সর্বক্ষেত্রেই আলাদা
গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আদিবাসী
অধ্যুষিত এলাকায় কোন খাসজমি থাকবে না। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে
তাদের মতামত প্রাধান্য পাবে। তাদের আপত্তি বা বিরোধিতার মুখে আদিবাসী এলাকা
থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা যাবে না। এ জনগোষ্ঠীর বাইরের কেউ এখানকার
জমির মালিক হতে পারবে না।
জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী আদিবাসীদের নিজস্ব
ভূমি ও অঞ্চলের ওপর তাদের অধিকার থাকবে। অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়াদির
ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্তশাসন বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রাষ্ট্রকে দিতে
হবে। তাদের অনুরোধ ছাড়া কোন ধরনের সামরিক কার্যক্রম ওই অঞ্চলে গ্রহণ করা
যাবে না। আদিবাসীদের ভূমির ওপর পূর্ণ অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকবে।
জাতিসংঘ তার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়াই
আদিবাসীদের জন্য সরাসরি ত্রাণসামগ্রী পাঠাতে পারবে। জেনেভায় অনুষ্ঠিত
জাতিসংঘের সংস্থার সম্মেলনে আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে সেনাবাহিনী মানবতা
বিরোধী কর্মকাণ্ড চালালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সে দেশের সামরিক
বাহিনীর সদস্যদের না নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর এটা এক
সরাসরি চাপ বলেই মনে করা হচ্ছে।
পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনী
উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে নিবেদিত থাকলেও জনসংহতি সমিতি,
ইউপিডিএফসহ স্বার্থান্বেষী মহল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছে।
পার্বত্য জেলাগুলো থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়াই তাদের
উদ্দেশ্য। সরকার সি-১৬৯ অনুমোদন করলে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ, তাদের মদতদাতা
দেশী-বিদেশী এনজিও, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ছোটখাটো ঘটনায়, নানা
ছলছুতায়ও জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়ে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর অবারিত
সুযোগ পাবে। এ প্রক্রিয়ায়ই দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ
শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়। মিশনারি, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার
সহায়তায় সেখানকার অধিবাসীদের খৃষ্টান হিসেবে ধর্মান্তরিত করা হয়। তারা
এখন স্বাধীন রাষ্ট্র।
পার্বত্য এলাকায় ১৪৯টি এনজিও কাজ করছে।
খৃষ্টান মিশনারিগুলো এখানে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। তারা প্রায় ১০০
গির্জা স্থাপন করেছে। পুরো বোরো সমপ্রদায়সহ ১৭ হাজার উপজাতীয়কে তারা
ধর্মান্তরিত করেছে। আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার পরবর্তী পর্যায়ে
ইউপিডিএফ, জনসংহতি সমিতিকে ব্যবহার করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো ও তা জিইয়ে
রাখার মতো দেশী-বিদেশী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পার্বত্য অঞ্চলে কার্যকর
রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, পার্বত্য
উপজাতিরা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তা পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপারে
যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টির কারণ হবে।
এই বিষয়টা আমাদের সামনে
অনেক ভুগাবে... একটা মোড় ঘুরানো আইডিয়া বের করতে হবে। পাবলিক কলেজে পড়ার
সময় দেখেছি, উপজাতিরা ভারতে পড়াশুনা বা যেকনো কারণে যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে
থাকে। বেশিরভাগ সাবলম্বি উপজাতি ভারতেই পড়াশুনা করে। কে জানে কয়টা স্পেশাল
ট্রেনিং নিয়ে ঢুকেছে...
পার্বত্য অঞ্ছল আমাদের দেশের প্রাকৃতিক ঘাটি। এটা হার ছাড়া হঊয়া মানে দেশের নিরাপত্তা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসা।
আদিবাসী
ইস্যু নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে সরকার। ভোটের সরল অঙ্কে আওয়ামী
লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উপজাতীয়দের আদিবাসী বলে উল্লেখ করা হলেও এখন
সরকার হিসাব মিলাতে পারছে না। এ কারণে উপজাতীয়দের আদিবাসী হিসেবে
সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃজাতি, ক্ষুদ্র
জাতিসত্তার জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলে ঘোষণা করার পরই আইএলও কনভেনশন-১৬৯ ঘোষণা
সরকারকে অনুমোদন করতে হবে। এর পরিণাম সম্পর্কে শঙ্কিত সরকারের
নীতিনির্ধারকরা। গত ২৯শে জুলাই জেনেভায় জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক
পরিষদ (ইকোসক)-এর সম্মেলনে বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলার উপজাতীয়দের
আদিবাসী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সরকার এতে তীব্র আপত্তি
জানিয়েছে। বিচলিতও বোধ করছে। তবে সরকার তার অবস্থান থেকে সরে আসছে না।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ মানবজমিনকে বলেন,
উপজাতীয়দের আদিবাসী ঘোষণার বিষয়টি রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী বিষয়। তাঁর
জানামতে সরকার এ নিয়ে চিন্তা করছে না। তিনি বলেন, বিদেশী ও দেশী কয়েকটি
এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থা উপজাতীয়দের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে
আইএলও কনভেনশন-১৬৯ রেটিফাই করার জন্য সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ ও প্রভাব
সৃষ্টির সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সূত্র জানায়, রাষ্ট্রের সর্বাধিক
গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থাটি এদের তৎপরতাকে ভয়াবহ ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত
করেছে। সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে তারা বলেছেন, এ
রেটিফিকেশন করা হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কঠিন মূল্য দিতে হবে। সরকারও দ্রুত
এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। সকল দলের মতামত ছাড়া এককভাবে
সিদ্ধান্ত না নেয়ার পক্ষে নন নীতিনির্ধারকরা।
আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আইএলও কনভেনশন-১৬৯ অনুমোদন করা হলে তা একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার জন্য বড় রকমের হুমকি হয়েও দেখা দিতে পারে। মানবাধিকার ও আদিবাসীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে মর্মে আদিবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে জাতিসংঘ সরকারের সঙ্গে কথা না বলেই শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে পারবে। যেমনটি হয়েছে দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে। কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসীরা আপত্তি করলে সেনাবাহিনী সেখানে থাকতে পারবে না। উপজাতি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার পিছনে এটাই বড় ভীতি হয়ে কাজ করছে। সূত্র জানায়, কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসীরা সর্বক্ষেত্রেই আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কোন খাসজমি থাকবে না। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে তাদের মতামত প্রাধান্য পাবে। তাদের আপত্তি বা বিরোধিতার মুখে আদিবাসী এলাকা থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা যাবে না। এ জনগোষ্ঠীর বাইরের কেউ এখানকার জমির মালিক হতে পারবে না।
জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী আদিবাসীদের নিজস্ব ভূমি ও অঞ্চলের ওপর তাদের অধিকার থাকবে। অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়াদির ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্তশাসন বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রাষ্ট্রকে দিতে হবে। তাদের অনুরোধ ছাড়া কোন ধরনের সামরিক কার্যক্রম ওই অঞ্চলে গ্রহণ করা যাবে না। আদিবাসীদের ভূমির ওপর পূর্ণ অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকবে। জাতিসংঘ তার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়াই আদিবাসীদের জন্য সরাসরি ত্রাণসামগ্রী পাঠাতে পারবে। গত মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সংস্থার সম্মেলনে আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে সেনাবাহিনী মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সে দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের না নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর এটা এক সরাসরি চাপ বলেই মনে করা হচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনী উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে নিবেদিত থাকলেও জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফসহ স্বার্থান্বেষী মহল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছে। পার্বত্য জেলাগুলো থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়াই তাদের উদ্দেশ্য। সরকার সি-১৬৯ অনুমোদন করলে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ, তাদের মদতদাতা দেশী-বিদেশী এনজিও, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ছোটখাটো ঘটনায়, নানা ছলছুতায়ও জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়ে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর অবারিত সুযোগ পাবে। এ প্রক্রিয়ায়ই দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়। মিশনারি, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় সেখানকার অধিবাসীদের খৃষ্টান হিসেবে ধর্মান্তরিত করা হয়। তারা এখন স্বাধীন রাষ্ট্র।
পার্বত্য এলাকায় ১৪৯টি এনজিও কাজ করছে। খৃষ্টান মিশনারিগুলো এখানে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। তারা প্রায় ১০০ গির্জা স্থাপন করেছে। পুরো বোরো সমপ্রদায়সহ ১৭ হাজার উপজাতীয়কে তারা ধর্মান্তরিত করেছে। আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার পরবর্তী পর্যায়ে ইউপিডিএফ, জনসংহতি সমিতিকে ব্যবহার করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো ও তা জিইয়ে রাখার মতো দেশী-বিদেশী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পার্বত্য অঞ্চলে কার্যকর রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, পার্বত্য উপজাতিরা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তা পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টির কারণ হবে।
অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে সরকার দুর্ভাবনায় পড়েছে। ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই সরকার এ ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উপজাতীয়দের আদিবাসী বলা হলেও বিষয়টি যে সরল অঙ্কের নয় তা সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিলম্বিত উপলব্ধিতে এসেছে। এ কারণেই পঞ্চদশ সাংবিধানিক সংশোধনীতে বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সমপ্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের কথা বলা হয়েছে। সি-১৬৯ রেটিফাই করতে হলে আবারও সংবিধান সংশোধন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন থাকায় সরকার এককভাবে সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে না। সব দলের মতামতের ভিত্তিতেই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ মানবজমিনকে বলেন- পাহাড়ি, নৃজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও সমপ্রদায়সমূহ ট্রাইবাল না এ্যাবঅরিজিন তা আগে নির্ধারণ করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাজার বছর ধরে রেড ইন্ডিয়ানরা, অস্ট্রেলিয়ার এ্যাবঅরিজিনরা রয়েছে। প্রকৃত অর্থেই তারা আদিবাসী। তাদের নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৪টি উপজাতিসহ দেশে ৪৫টি উপজাতি রয়েছে। ভারতে রয়েছে ৬৩৫টি উপজাতি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘেঁষা ভারতীয় অঞ্চলে উপজাতীয়রা রয়েছে। পাকিস্তানেও উপজাতি জনগোষ্ঠী রয়েছে। সেসব দেশে উপজাতীয়দের আদিবাসী ঘোষণার দাবি ওঠেনি
আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আইএলও কনভেনশন-১৬৯ অনুমোদন করা হলে তা একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার জন্য বড় রকমের হুমকি হয়েও দেখা দিতে পারে। মানবাধিকার ও আদিবাসীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে মর্মে আদিবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে জাতিসংঘ সরকারের সঙ্গে কথা না বলেই শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে পারবে। যেমনটি হয়েছে দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে। কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসীরা আপত্তি করলে সেনাবাহিনী সেখানে থাকতে পারবে না। উপজাতি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার পিছনে এটাই বড় ভীতি হয়ে কাজ করছে। সূত্র জানায়, কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসীরা সর্বক্ষেত্রেই আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কোন খাসজমি থাকবে না। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে তাদের মতামত প্রাধান্য পাবে। তাদের আপত্তি বা বিরোধিতার মুখে আদিবাসী এলাকা থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা যাবে না। এ জনগোষ্ঠীর বাইরের কেউ এখানকার জমির মালিক হতে পারবে না।
জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী আদিবাসীদের নিজস্ব ভূমি ও অঞ্চলের ওপর তাদের অধিকার থাকবে। অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়াদির ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্তশাসন বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রাষ্ট্রকে দিতে হবে। তাদের অনুরোধ ছাড়া কোন ধরনের সামরিক কার্যক্রম ওই অঞ্চলে গ্রহণ করা যাবে না। আদিবাসীদের ভূমির ওপর পূর্ণ অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকবে। জাতিসংঘ তার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়াই আদিবাসীদের জন্য সরাসরি ত্রাণসামগ্রী পাঠাতে পারবে। গত মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সংস্থার সম্মেলনে আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে সেনাবাহিনী মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সে দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের না নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর এটা এক সরাসরি চাপ বলেই মনে করা হচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনী উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে নিবেদিত থাকলেও জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফসহ স্বার্থান্বেষী মহল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছে। পার্বত্য জেলাগুলো থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়াই তাদের উদ্দেশ্য। সরকার সি-১৬৯ অনুমোদন করলে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ, তাদের মদতদাতা দেশী-বিদেশী এনজিও, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ছোটখাটো ঘটনায়, নানা ছলছুতায়ও জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়ে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর অবারিত সুযোগ পাবে। এ প্রক্রিয়ায়ই দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়। মিশনারি, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় সেখানকার অধিবাসীদের খৃষ্টান হিসেবে ধর্মান্তরিত করা হয়। তারা এখন স্বাধীন রাষ্ট্র।
পার্বত্য এলাকায় ১৪৯টি এনজিও কাজ করছে। খৃষ্টান মিশনারিগুলো এখানে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। তারা প্রায় ১০০ গির্জা স্থাপন করেছে। পুরো বোরো সমপ্রদায়সহ ১৭ হাজার উপজাতীয়কে তারা ধর্মান্তরিত করেছে। আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার পরবর্তী পর্যায়ে ইউপিডিএফ, জনসংহতি সমিতিকে ব্যবহার করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো ও তা জিইয়ে রাখার মতো দেশী-বিদেশী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পার্বত্য অঞ্চলে কার্যকর রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, পার্বত্য উপজাতিরা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তা পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টির কারণ হবে।
অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে সরকার দুর্ভাবনায় পড়েছে। ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই সরকার এ ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উপজাতীয়দের আদিবাসী বলা হলেও বিষয়টি যে সরল অঙ্কের নয় তা সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিলম্বিত উপলব্ধিতে এসেছে। এ কারণেই পঞ্চদশ সাংবিধানিক সংশোধনীতে বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সমপ্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের কথা বলা হয়েছে। সি-১৬৯ রেটিফাই করতে হলে আবারও সংবিধান সংশোধন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন থাকায় সরকার এককভাবে সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে না। সব দলের মতামতের ভিত্তিতেই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ মানবজমিনকে বলেন- পাহাড়ি, নৃজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও সমপ্রদায়সমূহ ট্রাইবাল না এ্যাবঅরিজিন তা আগে নির্ধারণ করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাজার বছর ধরে রেড ইন্ডিয়ানরা, অস্ট্রেলিয়ার এ্যাবঅরিজিনরা রয়েছে। প্রকৃত অর্থেই তারা আদিবাসী। তাদের নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৪টি উপজাতিসহ দেশে ৪৫টি উপজাতি রয়েছে। ভারতে রয়েছে ৬৩৫টি উপজাতি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘেঁষা ভারতীয় অঞ্চলে উপজাতীয়রা রয়েছে। পাকিস্তানেও উপজাতি জনগোষ্ঠী রয়েছে। সেসব দেশে উপজাতীয়দের আদিবাসী ঘোষণার দাবি ওঠেনি
ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকবে যে, কিভাবে একটি দেশের সুশৃঙ্খল এক সেনা বাহিনীকে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অকার্যকর করা হয়। ভবিষ্যতে যে কোন মহাবিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে রণকৌশল বিষয়ক বিদ্যা চর্চা করা হয়, সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পর্যায়ক্রমে অকার্যকরণের বিষয়টি একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপিত হবে।
মাঠ পর্যায়ে দুটি দেশের সেনাবাহিনীর যুদ্ধ এখন ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের ঠান্ডা যুদ্ধের পর যুদ্ধবিদ্যার মাত্রিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।
যেমন পাকিস্তান আর্মির কথাই ধরা যায়। ১৯৭১ সালে তারা যুদ্ধ করেছে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গণমানুষের পক্ষে। আজ তারা ব্যাপক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে তাদেরই দেশের জনগণদের (তালেবান) সাথে। গোয়েন্দা কার্যক্রমে মর্মান্তিক ভাবে অদক্ষ মুসলমান দেশগুলোর সেনাবাহিনীকে প্রায়শই দেখা যায় নিজ দেশের মানুষদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে।
মুসলমান দেশ সমুহে এসব গৃহ যুদ্ধের সময়, ইসলাম বিদ্বেষী প্রতিবেশী একটি দেশ কখনো নেয় জনগণের পক্ষ, কখনো বা নেয় ক্ষমতাশীল দলের পক্ষ। তবে উদ্দেশ্য তাদের সবসময়ই এক ও অভিন্ন, “মুসলমানদের ধ্বংস”।
৭১ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছিলো পূর্ব পাকিস্তানের গণ মানুষের পক্ষে, উদ্দেশ্য একটি শক্তিশালী মুসলমান দেশকে ভাগ করে, উপমহাদেশে নিজেদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি আর সেই সাথে এদেশের সম্পদের ব্যাপক লুটপাট। আর বর্তমানে তাদের চাহিদা আরো ভয়ঙ্কর, সরাসরি দেশ দখল। আর ঐ দখলের ক্ষেত্রে প্রধান এবং একমাত্র বাধা হিসেবে তারা ধারণা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। আর তাই অত্যন্ত সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধীরে ধীরে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেনা সদস্যদের মধ্য থেকে যারা ভারতকে সবচেয়ে বেশী সহযোগীতা করেছে তারা হচ্ছে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক সিদ্দিকী, সেনা প্রধান মইন উ আহমেদ, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল মামুন খালেদ ও মেজর জেনারেল রেজা নূর, এরাই হচ্ছে বিডিআর হত্যা কান্ডের মূল বিভীষণের দল।
বিডিআরের এই ব্যাপক সেনাঅফিসার হত্যাতেও ভারত সন্তুষ্ট নয়। তাই “র” এর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর উপর পর পর আরো অনেকগুলো খড়গ নেমে আসে। সেনাকুঞ্জে অফিসারদেরকে ডেকে এনে প্রতিবাদী অফিসারদেরকে চিহ্নিত করা হয় এবং দল বেধে তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়। তাপস হত্যা চেষ্টার বাহানা করে বের করে দেয়া হয় আরো একদল মেধাবী সেনা অফিসারদেরকে। মেজর জিয়া নামে এক অফিসারকে তো ইলিয়াস আলীর মতো সরাসরি গুম করে দেওয়া হয়। পরবর্র্তীতে “র” ষ্টিং অপারেশন এর পদ্ধতিতে এক সাজানো সেনাঅভ্যুন্থানের নাটক মঞ্চস্থ করে, সেনাবাহিনী হারিয়ে ফেলে আরো একদল সুশৃঙ্খল দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শুধু মেরুদন্ডই ভেঙ্গে দেওয়া হয়নি, দুপায়ের হাটু দুটিও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সবশেষে যে ক্ষতিটা করা হয় তা হল, ২/৪জন ব্যাতীত একদল অযোগ্য সেনা অফিসারদের প্রমোশন দিয়ে মেজর জেনারেল করা হয়েছে।
মেরুদন্ডহীন ও হাঁটুভাঙ্গা সেনাবাহিনী যাতে যুদ্ধক্ষেত্রে সঠিকভাবে সোজা হয়ে দাড়াতে না পারে সে জন্য তার মাথাটিকেও ভারী করে দেয়া হয়। বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন সেনাবাহিনীতে জেনারেলের সংখ্যা ছিলো ২৩ জন। এখন সেই সংখ্যা হয়েছে ৫৫ জন, দ্বিগুনেরও বেশী। সেনা বাহিনীর আনুগত্যতা অর্জন ছাড়াও সেনাবাহিনীকে একটি মাথাভারী প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করার বিষয়টি হচ্ছে ‘র’ প্ররোচিত আরেকটি সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্র। শুধুমাত্র সেনা কল্যাণ সংস্থাতেই একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও একজন ফুল কর্নেল এর স্থানে বর্তমান সরকার হঠাৎ করেই ১জন মেজর জেনারেল, ৮জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও ৯ জন ফুল কর্ণেল এর পোষ্টিং দেয়।
এ যেন ছিলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য প্রস্তুত কফিনের বুকে শেষ পেরেকটি। সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দেশের সীমান্ত রক্ষা করা আর জনগনের দায়িত্ব সার্বভৌমত্বের মেরুদন্ড সেনাবাহিনীকে দেখভাল করা। আমরা কখনই ভারতের কাছে মাথানত করবোনা, এদেশকে আর একটি সিকিম হতে দিবনা, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।