রবিবার, ২৬ মে, ২০১৩

বাংলাদেশ সিকিমই হতে চলেছে ?

Photo: অতীত বার বার ফিরে আসে বর্তমান হয়ে, বাংলাদেশ বুঝি সিকিমই হতে চলেছে !!


হিমালয় পাদদেশে ছোট্ট স্বাধীন দেশ সিকিমকে ভারতীয় ইউনিয়নের একত্রিত করার বিল ভারতের পার্লামেন্টে আনা হয় ১৯৭৪ সালের ৪ই সেপ্টেম্বর। ঐ বিল পাশ হয় ৩১০-৭ ভোটে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই-এম) বিপক্ষে ভোট দেয় এবং সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের মে মাসে। সিকিমকে পাকাপোক্তভাবে একটি অঙ্গরাজ্য করা হয়। এর আগে ব্রিটিশ ভারতে সিকিম ছিলো একটি আশ্রিত রাজ্য। স্বভুমিজাত লেপচা উপজাতীয়রা সিকিমের জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশ। এদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও পোষাক। উনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে তিব্বত থেকে ভুটিয়ারা ও নেপালিরা এসে বসতি স্থাপন করে। শিকিমে ৩টি ভাষা এখন প্রধান- লেপচা, ভুটানী ও নেপালী।

চতুদর্শ শতক থেকে নামগিয়াল বংশ সিকিমে রাজত্ব করে আসছিলো। প্রথম শাসক পুনটমং নামগিয়াল। ১৬৪২ সালে চোহিয়াল উপাধিতে ভূষিত করা হয় যার অর্থ ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরন করে যিনি রাজ কার্য পরিচালনা করেন। সর্বশেষ চোগিয়ালকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ১৯৭৫ সালে।

৭২৯৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এই ছোট্ট দেশটির রাজধানী গ্যাংটক। ১৮৮৬ সালে এক চুক্তির অধীনে সিকিম আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্জাদায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে যোগ দেয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ছেড়ে চলে গেলে ঐ চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ১৯৫০ সালে ভারতের সাথে সিকিমের চুক্তি হয়। ঐ চুক্তিতে সিকিমকে ভারতের আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্জাদা দেয়া হয়। চুক্তির অধীনে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখাশুনার পুরো কর্তৃত্ব ভারত নিয়ে নেয়।

চোগিয়াল ২৪ সদস্যের কাউন্সিলের মাধ্যমে দেশের শাসনকাজ পরিচালনা করতেন। এর মধ্যে ১৮ জন নির্বাচিত এবং ৬ জন চোগিয়াল মনোনীত। কাউন্সিলের ৩টি দলের প্রতিনিধি ছিল- ন্যাশনাল পার্টি, সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস ও সিকিম জনতা কংগ্রেস।

১৯৭৩ সালের মার্চ এপ্রিলে ন্যাশনাল কংগ্রেস ও জনতা কংগ্রেস রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি তোলেন। এবং এই দাবিতে আন্দোলন দিনে দিনে তুমুল হতে থাকে। চোগিয়ালের অনুরোধে ভারতীয় পুলিশ আইনশৃংখলা রক্ষা করে। ঐ ১৯৭৩ সালের ১৩ই এপ্রিল ঘোষনা করা হয় যে, চোগিয়াল রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি মেনে নিতে রাজি আছেন। এছাড়া তার আর উপায়ও কিছু ছিল না। কারণ, তিনি স্পষ্ট অনুধাবন করেন এই আন্দোলনের পিছনে শক্তি কে? পরবর্তীকালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা স্বীকার করেছেন যে, আন্দোলনের পিছনে তাদের ভুমিকা ছিল। সংস্কারে রাজি না হলে সিংহাসন থেকে উৎখাত করা হবে। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন নিশ্চিত তাই সিকিমের সাতন্ত্র রক্ষার চেষ্টায় রাজনৈতিক সংস্কারের অঙ্গীকার করেন। অঙ্গীকার মোতাবেক ১৯৭৪ সালের জুন মাসে সিকিম রাষ্ট্র আইনে পরিবর্তন আনা হয়। ঐ আইনের অধীনে চোগিয়ালের সর্বোচ্চ বিলুপ্ত হয়ে যায়। তিনি হন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। অবশ্য, আইন পরিষদে পাশ হওয়া আইন অনুমোদনের ক্ষমতা তাকে দেয়া হয়। এতেও শেষ রক্ষা হলো না। তাকে বিদায় নিতে হলো চিরদিনের মতো।

রাজনৈতিক সংস্কার অধীনে ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই সিকিমে সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। দলটি আইন পরিষদের ৩২টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসন পায়। দলের নেতা কাজী লেন্দুপ দরজি হলেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত যা চাইছিল, সেটাই ঘটলো। কাজী লেন্দুপ দরজি তো তাদেরই লোক।

এই নির্বাচনের পর সিকিমকে ভারতের অঙ্গীভুত করার প্রস্তুতি নেয় ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এর জন্য একটা বৈধতার প্রলেপ দরকার। সেটা করে দিলেন কাজী লেন্দুপ দরজি। ১৯৭৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বললেন: ভারতের দুই পরিষদ- লোকসভা ও রাজ্যসভায় সিকিমের প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করেও সিকিমকে আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্যাদায় রাখা যেতে পারে।
কাজী লেন্দুপ দরজি যেহেতু আইন পরিষদের ৩২টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসনের নেতা, তার মতামতই তো সিকিম জনগনের মতামত। সুযোগটা হাতছাড়া করলো না ভারত। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৫০ সালের চুক্তি, যাতে সিকিমকে আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়া হয়, তা বাতিল করলো। সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্য করার বিল আনা হলো পার্লামেন্টে। এই বিল সম্পর্কে চোগিয়াল এক বিবৃতিতে বললেন :
‘সিকিমের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব, যার নিশ্চয়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, ১৯৫০ সালের চুক্তিতে তা সিকিম জনগনের সম্মতি ছাড়াই এবং অজ্ঞাতে ভারতীয় পার্লামেন্টে সিকিমের প্রতিনিধি নেয়ার ত্বরিত পদক্ষেপে অস্বিকার করা হয়েছে।“

প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধির কাছে প্রেরিত এক বার্তায় চোগিয়াল বলেছেন যে বর্তমানে যে পদক্ষেপ, যা হবে “১৯৫০ সালের চুক্তির এক পার্শ্বিক বাতিলের সামিল এবং ভারতের সাথে সিকিমের একীকরণ।“
তিনি বলেন, ”ভারত-সিকিম সম্পর্কের সর্বোচ্চ আশ্বাস দেয়া হয় ভারত প্রদত্ত সিকিমের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখার রক্ষাকবচের মাধ্যমে।“

(কলকাতা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক দি অমৃতবাজার পত্রিকা, ২ সেপ্টেম্বর, সোমবার, ১৯৭৪)

https://docs.google.com/file/d/0B8_eJqXj-53aQXhaWHR1bWlMeVE/edit?pli=1অতীত বার বার ফিরে আসে বর্তমান হয়ে, বাংলাদেশ বুঝি সিকিমই হতে চলেছে !!


হিমালয় পাদদেশে ছোট্ট স্বাধীন দেশ সিকিমকে ভারতীয় ইউনিয়নের একত্রিত করার বিল ভারতের পার্লামেন্টে আনা হয় ১৯৭৪ সালের ৪ই সেপ্টেম্বর। ঐ বিল পাশ হয় ৩১০-৭ ভোটে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই-এম) বিপক্ষে ভোট দেয় এবং সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের মে মাসে। সিকিমকে পাকাপোক্তভাবে একটি অঙ্গরাজ্য করা হয়। এর আগে ব্রিটিশ ভারতে সিকিম ছিলো একটি আশ্রিত রাজ্য। স্বভুমিজাত লেপচা উপজাতীয়রা সিকিমের জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশ। এদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও পোষাক। উনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে তিব্বত থেকে ভুটিয়ারা ও নেপালিরা এসে বসতি স্থাপন করে। শিকিমে ৩টি ভাষা এখন প্রধান- লেপচা, ভুটানী ও নেপালী।

চতুদর্শ শতক থেকে নামগিয়াল বংশ সিকিমে রাজত্ব করে আসছিলো। প্রথম শাসক পুনটমং নামগিয়াল। ১৬৪২ সালে চোহিয়াল উপাধিতে ভূষিত করা হয় যার অর্থ ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরন করে যিনি রাজ কার্য পরিচালনা করেন। সর্বশেষ চোগিয়ালকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ১৯৭৫ সালে।

৭২৯৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এই ছোট্ট দেশটির রাজধানী গ্যাংটক। ১৮৮৬ সালে এক চুক্তির অধীনে সিকিম আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্জাদায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে যোগ দেয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ছেড়ে চলে গেলে ঐ চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ১৯৫০ সালে ভারতের সাথে সিকিমের চুক্তি হয়। ঐ চুক্তিতে সিকিমকে ভারতের আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্জাদা দেয়া হয়। চুক্তির অধীনে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখাশুনার পুরো কর্তৃত্ব ভারত নিয়ে নেয়।

চোগিয়াল ২৪ সদস্যের কাউন্সিলের মাধ্যমে দেশের শাসনকাজ পরিচালনা করতেন। এর মধ্যে ১৮ জন নির্বাচিত এবং ৬ জন চোগিয়াল মনোনীত। কাউন্সিলের ৩টি দলের প্রতিনিধি ছিল- ন্যাশনাল পার্টি, সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস ও সিকিম জনতা কংগ্রেস।

১৯৭৩ সালের মার্চ এপ্রিলে ন্যাশনাল কংগ্রেস ও জনতা কংগ্রেস রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি তোলেন। এবং এই দাবিতে আন্দোলন দিনে দিনে তুমুল হতে থাকে। চোগিয়ালের অনুরোধে ভারতীয় পুলিশ আইনশৃংখলা রক্ষা করে। ঐ ১৯৭৩ সালের ১৩ই এপ্রিল ঘোষনা করা হয় যে, চোগিয়াল রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি মেনে নিতে রাজি আছেন। এছাড়া তার আর উপায়ও কিছু ছিল না। কারণ, তিনি স্পষ্ট অনুধাবন করেন এই আন্দোলনের পিছনে শক্তি কে? পরবর্তীকালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা স্বীকার করেছেন যে, আন্দোলনের পিছনে তাদের ভুমিকা ছিল। সংস্কারে রাজি না হলে সিংহাসন থেকে উৎখাত করা হবে। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন নিশ্চিত তাই সিকিমের সাতন্ত্র রক্ষার চেষ্টায় রাজনৈতিক সংস্কারের অঙ্গীকার করেন। অঙ্গীকার মোতাবেক ১৯৭৪ সালের জুন মাসে সিকিম রাষ্ট্র আইনে পরিবর্তন আনা হয়। ঐ আইনের অধীনে চোগিয়ালের সর্বোচ্চ বিলুপ্ত হয়ে যায়। তিনি হন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। অবশ্য, আইন পরিষদে পাশ হওয়া আইন অনুমোদনের ক্ষমতা তাকে দেয়া হয়। এতেও শেষ রক্ষা হলো না। তাকে বিদায় নিতে হলো চিরদিনের মতো।

রাজনৈতিক সংস্কার অধীনে ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই সিকিমে সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। দলটি আইন পরিষদের ৩২টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসন পায়। দলের নেতা কাজী লেন্দুপ দরজি হলেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত যা চাইছিল, সেটাই ঘটলো। কাজী লেন্দুপ দরজি তো তাদেরই লোক।

এই নির্বাচনের পর সিকিমকে ভারতের অঙ্গীভুত করার প্রস্তুতি নেয় ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এর জন্য একটা বৈধতার প্রলেপ দরকার। সেটা করে দিলেন কাজী লেন্দুপ দরজি। ১৯৭৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বললেন: ভারতের দুই পরিষদ- লোকসভা ও রাজ্যসভায় সিকিমের প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করেও সিকিমকে আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্যাদায় রাখা যেতে পারে।
কাজী লেন্দুপ দরজি যেহেতু আইন পরিষদের ৩২টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসনের নেতা, তার মতামতই তো সিকিম জনগনের মতামত। সুযোগটা হাতছাড়া করলো না ভারত। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৫০ সালের চুক্তি, যাতে সিকিমকে আশ্রিত রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়া হয়, তা বাতিল করলো। সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্য করার বিল আনা হলো পার্লামেন্টে। এই বিল সম্পর্কে চোগিয়াল এক বিবৃতিতে বললেন :
‘সিকিমের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব, যার নিশ্চয়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, ১৯৫০ সালের চুক্তিতে তা সিকিম জনগনের সম্মতি ছাড়াই এবং অজ্ঞাতে ভারতীয় পার্লামেন্টে সিকিমের প্রতিনিধি নেয়ার ত্বরিত পদক্ষেপে অস্বিকার করা হয়েছে।“

প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধির কাছে প্রেরিত এক বার্তায় চোগিয়াল বলেছেন যে বর্তমানে যে পদক্ষেপ, যা হবে “১৯৫০ সালের চুক্তির এক পার্শ্বিক বাতিলের সামিল এবং ভারতের সাথে সিকিমের একীকরণ।“
তিনি বলেন, ”ভারত-সিকিম সম্পর্কের সর্বোচ্চ আশ্বাস দেয়া হয় ভারত প্রদত্ত সিকিমের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখার রক্ষাকবচের মাধ্যমে।“

(কলকাতা থেকে প্রকাশিত অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক দি অমৃতবাজার পত্রিকা, ২ সেপ্টেম্বর, সোমবার, ১৯৭৪)

https://docs.google.com/file/d/0B8_eJqXj-53aQXhaWHR1bWlMeVE/edit?pli=1

ভারতকে দেয়া ট্রানজিট সুবিধার অংশ এই পোর্ট নির্মাণ..!?


Photoরোববার, ২৬ মে ২০১৩ঃঅতিগোপনে অনুমোদন দিয়েছে সরকার : কী কারণে এই পোর্ট নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা না দেখে বলা যাবে না -শাজাহান খান : পোর্টের বিষয়ে সরকার অবগত আছে : যুগ্ম সচিব আলাউদ্দিন : সংবিধান পরিপন্থি এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি -শমসের মোবিন চৌধুরী
তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের : নারায়ণগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার পোর্ট নির্মাণ করছে ভারত। সরকার অতিগোপনে এই বন্দর নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। ভারতকে দেয়া ট্রানজিট সুবিধার অংশ হিসেবেই এই পোর্ট নির্মাণ করা হবে। এই পোর্টের প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ১০ মে দরপত্র আহ্বান করেছে ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতকে এই বন্দর নির্মাণের অনুমোদন দেয়ার কথা গতকাল ইনকিলাবের কাছে স্বীকার করেছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কুমুদিনি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ৪৬ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এই পোর্ট। দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৭ জুন বিকাল ৩টা পর্যন্ত। অতিগোপনে সরকারের ভারতীয় এই পোর্টের অনুমোদন দেয়াকে বিপদজনক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। একে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, কী কী শর্তে বা কারণে এই পোর্ট নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা না দেখে বলা যাবে না। আগামীকাল (আজ) সচিবালয়ে গিয়ে ফাইলপত্র দেখে তা বলতে হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আলাউদ্দিন গতকাল সন্ধ্যায় ইনকিলাবকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের পোর্টের বিষয়ে সরকার অবগত আছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কুমুদিনি কল্যাণ ট্রাস্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারত এই অভ্যন্তরীণ বন্দর নির্মাণ করবে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক কূটনীতিক শমসের মোবিন চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় ইনকিলাবকে বলেন, কী ধরনের চুক্তির মাধ্যমে সরকার এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে তা না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে সরকার বিষয়টি গোপন রেখে সবার মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। বিদেশের সাথে কোন বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বা সমঝোতা হলে তা অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে। গোপনে কোন কিছু করলে সেটা নীতিগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এটা অবশ্যই সংবিধান পরিপন্থি এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্যও হুমকি।
জ্বালানি-গ্যাস-বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেছেন, এটা ভারতকে দেয়া ট্রানজিট সুবিধারই অংশ। গোপনে সরকার ভারতকে পোর্ট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে এখানে স্বচ্ছতা নেই। এটা বিপদজনক। জনগণের কাছে আড়াল করেই বাংলাদেশে অন্য দেশ পোর্ট নির্মাণ করছে। ট্রানজিটের ক্ষেত্রেও একই লুকোচুরি হচ্ছে। ভারত একদিকে বাংলাদেশের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে জেলখানা বানাচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশকে তাদের সড়ক বানাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের বন্দর নির্মাণ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত দরপত্রের টার্মস অব রেফারেন্সে উল্লে¬খ করা হয়েছে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে ৪৬ একর জমি রয়েছে কুমুদিনি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল লিমিটেডের। প্রতিষ্ঠানটি ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই জমিতে একটি অভ্যন্তরীণ নৌ-কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ভারত সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ দরপত্র আহ্বান করেছে। দরপত্র বিবরণীতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আওতাও তুলে ধরা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জের প্রস্তাবিত টার্মিনালের স্থান পরিদর্শন করে একাধিক প্রতিবেদন জমা দেবে। এসব প্রতিবেদনে স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পপণ্যের উৎপাদন, বর্তমান প্রবৃদ্ধি, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের শক্তি, সম্ভাবনা, দুর্বলতা ও ঝুঁকি বিষয়েও বিশ্লে¬ষণ করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের আশপাশে আর কোনো অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল রয়েছে কিনা, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তাও গুরুত্ব পাবে। চলমান কনটেইনার টার্মিনালের সক্ষমতা, কনটেইনার ও কার্গোর ধরনসহ অবকাঠামো ও ব্যয় বিষয়ে আলোকপাত করতে হবে। জমির দাম, তার উন্নয়ন খরচ, অবকাঠামো নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি স্থাপনে সম্ভাব্য ব্যয়ের একটি চিত্র তুলে ধরতে হবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদনে। একই সঙ্গে থাকবে কনটেইনার হ্যান্ডলিং, টার্মিনাল ভাড়া, ভ্যালু এডেড সার্ভিসসহ অন্যান্য খাত থেকে সম্ভাব্য আয়ের বিবরণীও। এছাড়া টার্মিনাল পরিচালন ব্যয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, কর ও শুল্কসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের হিসাবও সংযুক্ত করতে হবে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী, কার্যাদেশ পাওয়ার ১৪ সপ্তাহের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করতে হবে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন পার্ট-এ, পরবর্তী তিন সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন পার্ট-বি, পরবর্তী তিন সপ্তাহে খসড়া প্রতিবেদন (পার্ট-এ, পাট-বি ও পার্ট-সি) এবং পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আদি ভারতীয় পরামর্শক/পেশাদারদের কাছ থেকে সিলগালা দরপত্র আহ্বান করছে। সেকশন অফিসার (ডিপিএ), রুম নং ৩১৩১, বি উইং, জওহর লাল নেহেরু ভবন (জেএনবি), নয়া দিল্লি থেকে ২ হাজার রুপির পে-অর্ডারের বিনিময়ে পাওয়া যাবে দরপত্রের ডকুমেন্ট। এ জন্য ‘পে এন্ড একাউন্টস অফিসার, মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স, নয়া দিল্লি¬’ বরাবরে এই পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। দরপত্র জমা দেয়ার সময় এর সঙ্গে এক লাখ রুপির ইএমডি ড্রাফট ‘দ্য পে এন্ড একাউন্টস অফিসার, মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স’ বরাবর জমা দিতে হবে। দরপত্র জমা দিতে হবে দুই-বিজ্ঞপ্তি (টু বিড) সিস্টেমে। এর একটি হবে টেকনিক্যাল। আরেকটি মূল্য বা খরচ বাবদ।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জে কনটেইনার টার্মিনাল তৈরির পরিকল্পনা করে কুমুদিনি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠন করা হয় কুমুদিনি কনটেইনার টার্মিনাল। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের পাশাপাশি ভারতীয় আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য লোড-আনলোডে নারায়ণগঞ্জ কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনই এর প্রধান উদ্দেশ্য। বেনাপোল বন্দরের বিকল্প হিসেবে এ টার্মিনাল ব্যবহার করা যায় কিনা, তাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

www.dailyinqilab.com
 
 

শনিবার, ২৫ মে, ২০১৩

নারায়ণগঞ্জে টার্মিনাল পোর্ট নির্মাণের টেন্ডার দিয়েছে ভারত.!?

নারায়ণগঞ্জে টার্মিনাল পোর্ট নির্মাণের টেন্ডার দিয়েছে ভারত সরকার; তা ও দিল্লীতে বসে! সবাইকে শাহবাগ আর মতিঝিলে ব্যস্ত রেখে একদিকে সুন্দরবন ধ্বংশের রামপাল প্রকল্প চুক্তি স্বাক্ষর শেষ না হতেই নারায়নগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নির্মাণ করা হচ্ছে এই টার্মিনাল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য দরপত্রও আহ্বান করেছে। দর প্রস্তাব জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৭ জুন বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর (ডিজি শিপিং) ও বিনিয়োগ বোর্ড কারও অনুমোদন নেই। এমনকি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখাসহ বন্দর শাখাও এ বিষয়ে কোনো কিছুই অবগত নয়। এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ বোর্ডেও এ বিষয়ে কোনো আবেদন জমা পড়েনি। সবাইকে অন্ধকারে রেখে দেশের একেকটি অংশকে এভাবে একের পর এক ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।

ভারতের গোলামী করার জন্যই কী আমরা পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছিলাম? দেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত। একদিকে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চাওয়া কিছু দালাল, আর অন্যদিকে দেশ প্রেমিক বাংলাদেশী। আপনি কোন পক্ষে?


http://3.imimg.com/data3/QX/GV/HTT-947/947_2013-05-10-13-12-48_1368171768.jpg

খবরের লিংক: http://www.amadershomoy2.com/content/2013/05/24/middle0760.htm#.UZ8aE2CAQdk.facebook

ভারতীয় ওয়েবসাইটে টেন্ডারটির আসল লিঙ্ক: http://tenders.indiamart.com/details/977289872/
নারায়ণগঞ্জে টার্মিনাল পোর্ট নির্মাণের টেন্ডার দিয়েছে ভারত সরকার; তা ও দিল্লীতে বসে! সবাইকে শাহবাগ আর মতিঝিলে ব্যস্ত রেখে একদিকে সুন্দরবন ধ্বংশের রামপাল প্রকল্প চুক্তি স্বাক্ষর শেষ না হতেই নারায়নগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নির্মাণ করা হচ্ছে এই টার্মিনাল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য দরপত্রও আহ্বান করেছে। দর প্রস্তাব জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৭ জুন বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর (ডিজি শিপিং) ও বিনিয়োগ বোর্ড কারও অনুমোদন নেই। এমনকি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখাসহ বন্দর শাখাও এ বিষয়ে কোনো কিছুই অবগত নয়। এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ বোর্ডেও এ বিষয়ে কোনো আবেদন জমা পড়েনি। সবাইকে অন্ধকারে রেখে দেশের একেকটি অংশকে এভাবে একের পর এক ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।

ভারতের গোলামী করার জন্যই কী আমরা পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছিলাম? দেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত। একদিকে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চাওয়া কিছু দালাল, আর অন্যদিকে দেশ প্রেমিক বাংলাদেশী। আপনি কোন পক্ষে?


http://3.imimg.com/data3/QX/GV/HTT-947/947_2013-05-10-13-12-48_1368171768.jpg

খবরের লিংক: http://www.amadershomoy2.com/content/2013/05/24/middle0760.htm#.UZ8aE2CAQdk.facebook

ভারতীয় ওয়েবসাইটে টেন্ডারটির আসল লিঙ্ক: http://tenders.indiamart.com/details/977289872/